Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষকভাইদের করণীয়
বিস্তারিত
  • জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষকভাইদের করণীয়
  • সুপ্রিয় কৃষিজীবী ভাইবোন, জৈষ্ঠ্য মাসের পাকা ও মিষ্টি ফলের মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা থাকে বাংলার দিণ প্রান্তর। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু তরমুজ, বাঙ্গিসহ মৌসুমি ফলের সৌরভ আমাদের রসনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়ে যায়। এছাড়াও মৌসুমি ফলের প্রক্রিয়াজাতকরনের মাধ্যমে তৈরি আচার, চাটনি, জ্যাম, জেলি জৈষ্ঠ্যর গরমে ভিন্ন স্বাদের ব্যাঞ্জণা নিয়ে হাজির হয়।  কৃষিবান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চি জমিও ফেলে না রাখার নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তাই কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধিতে এই মধুমাসে প্রিয় পাঠক, চলুন জেনে নেই জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষির করনীয় বিষয়গুলো:
  • বোরো:
  • জমিতে শতকরা 80 ভাগ পেকে গেলে জমির ধান সংগ্রহ করে কেটে মাড়াই, ঝাড়াই করে ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে।
  • শুকনা বীজ ছায়ায় ঠান্ডা করে প্লাষ্টিকের ড্রাম, পলিথিন কোটেড বস্তা, মাটির কলসি এসবে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।

আউশ:

  • এখনো আউশের বীজ বোনা না হয়ে থাকলে এখনই বীজ বপন করতে হবে। চারার বয়স 20-25 ‍দিন হলে মূল জমিতে রোপন করতে হবে।
  • রোপনের পর চারার বয়স 12-15 দিন হলে ইউরিয়া সারের প্রথম কিস্তি হিসেবে একর প্রতি 18 কেজি ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। এবং এর 15 দিন পর একই মাত্রায় 2য় কিস্তি উপরি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সারের কার্যকারিতা বাড়াতে জমিতে সার প্রয়োগের সময় ছিপছিপে পানিসহ জমি আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।

বোনাআমন:

  • নিচু এলাকায় বোরো ধান কাটার 7-10 আগে বোনা আমনের বীজ ছিটিয়ে দিলে বা বোরো ধান কাটার সাথে সাথে আমন ধানের চারা রোপন করলে বন্যা বা বর্ষার পানি আসার আগেই চারা সতেজ হয়ে ওঠে এবং পানি বাড়ার সাথে সাথে সমান তালে বাড়ে।

রোপাআমন:

  • মধ্য জ্যৈষ্ঠ মাসের পর রোপাআমনের আদর্শ বীজতলা তৈরি করতে হবে। বীজতলা তৈরির জন্য রোদ পরে এমন উঁচু জমি নির্বচন করে চাষ, মই পানি দিয়ে ভালোভাবে থকথকে কাঁদাময় করে নিতে হবে। প্রতি বর্গমিটার জমির জ্ন্য 80 গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়।
  • বীজ বোনার আগে বীজতলায় এক স্তর ছাই ছিটিয়ে দিলে চারা তোলার সময় উপকার পাওয়া যায়।
  • ভাল ফলন পেতে হলে আগাম জাত হিসাবে ব্রি ধান49, ব্রি ধান57, ব্রি ধান62, ব্রি ধান80, ব্রি ধান87, বিনা ধান22, বিনা ধান7, বিনা ধান15, বিনা ধান16, বিনা ধান20, খরা সহিষ্ণু জাত হিসেবে ব্রি ধান56, ব্রি ধান57, ব্রি ধান66, ব্রি ধান71, জলমগ্নতা সহিষ্ণু জাত হিসেবে ব্রি ধান51, ব্রি ধান52, ব্রি ধান79, বিনা ধান11, বিনা ধান12, মাঝারি লবণাক্ততা সহনশীল জাত হিসেবে ব্রি ধান40, ব্রি ধান53, ব্রি ধান54, ব্রি ধান73, বিনা ধান8, বিনা ধান10, সুগন্ধি ব্রি ধান80 চাষ করা যাবে।
  • ভাল চারা পাওয়ার জন্য বীজতলায় নিয়মিত সেচ দেওয়া, অতিরিক্ত পানি নিকাশের ব্যবস্থা করা, আগাছা দমন, সবুজ পাতা ফড়িং ও থ্রিপস িএর  আক্রমণ প্রতিহত করাসহ অন্যান্য কাজগুলি সতর্কতার সাথে করতে হবে।
  • চারা হলুদ হয়ে গেলে প্রতি বর্গমিটারে 7 গ্রাম হারে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। এরপরও যাদ হলুদ থাকে প্রতি বর্গমিটারে 10 গ্রাম করে জিপসাম সার প্রয়োগ করতে হবে।
  • জ্যৈষ্ঠ মাসে আউশ ও বোনা আমনের জমিতে পামরি পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। পামরি পোকা ও এর কীড়া পাতার সবুজ অংশ খেয়ে গাছের অনেক ক্ষতি করে। তাছাড়া আক্রান্ত গাছের গোড়া থেকে 5 সেন্টিমিটার (2 ইঞ্চি) রেখে বাকি অংশ কেটে কীড়া ও পোকা ধ্বংস করা যায়। আক্রমণ বেশি হলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।

পাট:

  • পাটের জমিতে আগাছা পরিষ্কার এবং ঘন ও দুর্বল চারা তুলে পাতলা করা, সেচ এসব কাজগুলো যথাযথভাবে করতে হবে। ফল্গুনি তোষা জাতের জন্য একরপ্রতি 40 কেজি ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
  • এ মাসে পাটের বিছা পোকা এবং ঘোড়া পোকা জমিতে আক্রমণ করে থাকে। বিছা পোকা দলবদ্ধ ভাবে পাতা ও ডগা খায়, ঘোড়া পোকা গাছের কচি পাতা ও ডগা খেয়ে পাটের অনেক ক্ষতি করে থাকে। বিছা ও ঘোড়া পোকারর আক্রমণ রোধ করতে পোকার ডিমের গাদা ও পাতার নিচ থেকে পোকা সংগ্রহ করে মেরে বা পুরিয়ে ফেলতে হবে। আাক্রমণ বেশি হলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিকভাবে সঠিক সময় সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।

শাকসবজি:

  • মাঠে বা বসতিবাড়ির আঙ্গিনায় গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির পরিচরর্যা সতর্কতার সাথে করতে হবে। এ সময় সারের উপরি প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার, গোড়ায় মাটি তুলে দেয়া, লতা জাতীয় সবজির জন্য বাউনি বা মাচার ব্যবস্থা করা খুব জরুরি। লতানো সবজির দৈহিক বৃদ্ধি যত বেশি হয়, তার ফুল ও ফল ধারণ ক্ষমতা তত কম হয়। সেজন্য বেশি বৃদ্ধি সমৃদ্ধ লতার/গাছের 15-20 শতাংশের লতা পাতা কেটে দিলে তাড়াতাড়ি ফুল ও ফল ধরবে।

আদা ও হলুদ:

  • বাড়ির কাছাকাছি উঁচু এমনকি আধা ছায়াযুক্ত জায়গায় আদা হলুদের চাষ করা যাবে।

সবুজসার: 

  • যারা সবুজসার করার জন্য ধইঞ্চা বা লিগিউম জাতীয় গাছ লাগিয়ে ছিলেন, তাদের চারার বয়স 35-45 দিন হলে চাষ ও মই দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। সবুজ সার মাটিতে মেশানোর 7/10 দিন পরই ধান বা অন্যান্য ফসলের চারা রোপণকরা যাবে।

নারিকেল ও সুপারি:

  • উপযূক্ত মাতৃগাছ থেকে নারিকেল, সুপারির ভাল বীজ সংগ্রহ করে বীজতলায় লাগানো যাবি।

তাছাড়া কৃষির যে কোন সমস্যায় উপজেলা কৃষি অফিস অথবা কৃষি কল সেন্টারের 16123 নম্বরে বা কৃষক বন্ধু সেবার 3331 নম্বরে কল করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারেন।


ছবি
ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
15/05/2024
আর্কাইভ তারিখ
15/05/2024